23 Nov 2024, 02:30 am

চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণায় বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ দেবে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসা বিজ্ঞানে আরও গবেষণা চালানোর ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, তাঁর সরকার এ খাতে বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ দেবে।

বিজ্ঞান ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণায় তিনি গুরুত্বারোপ করে বলেন, “যারা চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণায় জড়িত থাকবেন তাদের জন্য সরকার বিশেষ প্রনোদনা প্যাকেজ দেবে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে তাঁর কার্যালয়ের (পিএমও) শাপলা হলে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ,’ ‘এনএসটি ফেলোশিপ’ ও ‘বিশেষ গবেষণা অনুদান’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
তিনি বলেন, গবেষণা ছাড়া কোনো কিছুতেই উৎকর্ষ লাভ করা যায় না। বিজ্ঞানকে বঙ্গবন্ধুই বেশি গুরুত্ব দিতেন। ৭৫’র পর স্বৈরশাসকরা গবেষণায় গুরুত্ব দেয়নি। জাতির পিতা স্বাধীন দেশে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার সময়ই পরমাণু শক্তি কমিশন এবং বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিষ্ঠিত পরমাণু শক্তি কমিশন মানুষের স্বাস্থ্য পরিচর্যায় অত্যাধুনিক নিউক্লিয়ার মেডিসিনের প্রচলন করে। ২২টি নিউক্লিয়ার মেডিসিন সেন্টার থেকে ক্যান্সার ও থাইরয়েডজনিত রোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসা হচ্ছে। তিনি বেতবুনিয়া ভ’উপগ্রহ কেন্দ্রও স্থাপন করেন, যে পদাংক অনুসরণ করে আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপন করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্য বিজ্ঞান এই দুটোর গবেষণার ওপর আমাদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। সেজন্য আমি অনুরোধ করব যে এবার আমাদের গুরুত্ব হবে বিজ্ঞান আর স্বাস্থ্যবিজ্ঞানে। আমরা চাই আমাদের গবেষণায় আরও বেশি সবাই মনোযোগী হবে, গবেষকদের কোনো অসুবিধা থাকলে সেটা কীভাবে দূর করা যায় সেই ব্যাপারে আমাদের সরকারের সব সময় অত্যন্ত আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানব সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ সাধন ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন। আমাদের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা একটা জায়গায় একটু পিছিয়ে আছি, সেটা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণায়। তিনি চিকিৎসকদের গবেষণায় মনোযোগী হবারও আহবান জানান।
সরকার প্রধান বলেন, তাহলে দেশের মানুষ সুস্থ হবে, সবল হবে, তারা মেধা বিকাশের সুযোগ পাবে। এরপর থেকে যারা স্বাস্থ্য বিষয়ে গবেষণা করবে তাদের আরও বিশেষ করে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ কৃষিতে গবেষণা করে আজকে আমরা শুধু খাদ্যের স্বয়ংসম্পূর্ণ না বাংলাদেশে এখন ফলমূল, এমনকি যে টিউলিপ ফুল শীতের দেশ ছাড়া হয় না সেই টিউলিপও বাংলাদেশের হচ্ছে। স্ট্রবেরি ও বাংলাদেশে হচ্ছে। এসবই গবেষণার ফসল। গবেষণায় আমাদের জন্য নতুন ভাগ্য খুলে দেয়।
তিনি বলেন, ‘এজন্য আবারও চিকিৎসকদের কাছে আমি অনুরোধ করব যারা সরকারি চাকরি করছেন তারা প্রাইভেট প্র্যাকটিস একটু কমিয়ে দিয়ে গবেষণার দিকে নজর দিন। আর এরপরে যারা গবেষণা করবেন তাদের উৎসাহ দেয়ার জন্য আমরা যা করার করব’।
দেশের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও পাবনার রূপপুরে করা হবে উল্লেখ করে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয়টির কাজ যাতে শুরু করা যায় সেই ব্যাপারে এখন থেকেই তিনি প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।
তিনি বলেন, আমরা রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছি। আরেকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের চেষ্টা করেছিলাম দক্ষিণে। কিন্তু সেখাানের মাটি এত নরম, প্রত্যেকটি দ্বীপে অনুসন্ধ্যান চালিয়ে আমরা দেখেছি। আসলে সেখানে করা বোধ হয় সম্ভব নয়। তবে এখন যেখানে আমরা বিদ্যুৎ কেন্দ্র করেছি সেটার কাজ সম্পূর্ণ সমাপ্ত হবার পর দ্বিতীয়টাও আমরা এই পাবনাতে, এই রুপপুরেই করতে পারবো।
তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর উ্েদ্দশ্যে বলেন, এটার কাজ যখন শেষ হবে সাথে সাথে আমরা যেন দ্বিতীয়টার কাজ শুরু করতে পারি এখন থেকে আমাদের সে প্রস্তুতি নিতে হবে। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আমরা উৎক্ষেপন করেছি এবং স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপনেরও আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।

তিনি বলেন, ‘৭৫ পরবর্তী সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছিল অস্ত্রের ঝনঝনানি, সেশনজট। শিক্ষার পরিবেশটাই নষ্ট করা হয়েছিল। ১৯৯৬ সাল যখন ক্ষমতায় আসি তখন একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম যে বিজ্ঞানের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্র-ছাত্রী নাই বলতে গেলে। এর ফলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার উপর আমরা জোর দিই। আমরা ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিই। যাতে প্রযুক্তি শিক্ষার প্রতি মানুষের আকর্ষণ তৈরি হয়। আমরা গবেষণার জন্য প্রথমে ১২ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ এবং এরপর থেকে বাজেটে ১শ’ কোটি টাকা গবেষণার জন্য বরাদ্দ করি।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ,’ ‘এনএসটি ফেলোশিপ’ ও ‘বিশেষ গবেষণা অনুদান’ প্রদান করেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান সভাপতিত্ব করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ মালেক এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 8604
  • Total Visits: 1273167
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২০শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ২:৩০

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018